প্রলয়োল্লাস

প্রলয়োল্লাস Madhyamik Bengali Suggestion 2023

প্রলয়োল্লাস Madhyamik Bengali Suggestion 2023
মাধ্যমিক প্রলয়োল্লাস সাজেশন ২০২4

প্রলয়োল্লাস Madhyamik Bengali Suggestion 2024 | মাধ্যমিক অভিষেক সাজেশন ২০২4 যদি যদি কোন কিছু বাদ পড়ে যায় তাহলে কিন্তু তোমরা অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবে। আমরা এই যে সাজেশন তৈরি করে দিলাম এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য তো অবশ্যই কিন্তু full সাজেশনটা আপনারা কমপ্লিট করে নেবেন কারণ সমস্ত প্রশ্ন মাথায় রেখে এই সাজেশনটা তোমাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে নিচে পিডিএফও দেওয়া রয়েছে অবশ্যই তোমরা পিডিএফ তাকে করে নেবে এবং তোমাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে অবশ্যই শেয়ার করে দেবে। Madhyamik Bengali প্রলয়োল্লাস Suggestion 2023

যদি কারো কোন কিছু জানার থাকে বা বলার থাকে অবশ্যই নিজের কমেন্ট বক্সটিতে ক্লিক করে কমেন্ট করে দেবেন তাহলে আমাদেরও বুঝতে সুবিধা হবে কার কোথায় অসুবিধা রয়েছে বা সুবিধা হচ্ছে। Madhyamik Bengali জ্ঞানচক্ষু Suggestion 2023

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

আশা করব সম্পূর্ণ সাজেশনটা তোমাদের খুব কাজে আসবে তাই অনেক কষ্ট করে এই সাজেশনটা বানানো হয়েছে।

Madhyamik Bengali প্রলয়োল্লাস Suggestion 2023 দেবে তাদের জন্য কিন্তু এই অংকে সাজেশনটা তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩ এর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যদি আরও কোন সাজেশন লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করুন বা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং সার্চ বক্সে আপনি আপনার প্রশ্নটি লিখুন দেখবেন তার উত্তর নিচে আপনারা পেয়ে যাবেন এবং সমস্ত সাবজেক্টের সাজেশন প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েব পেজটাকে বুক মার্ক করে রাখুন তাতে তোমাদের সুবিধা হবে।

চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলেও যুক্ত হতে পারো টেলিকম চ্যানেলের লিংক নিচে দেওয়া রয়েছে ধন্যবাদ। Madhyamik Bengali প্রলয়োল্লাস Suggestion 2023

মাধ্যমিক প্রলয়োল্লাস সাজেশসাজেশন ২০২4

 


অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান – ১) প্রলয়োল্লাস ( কাজী নজরুল ইসলাম ) প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023

  • “তোরা সব জয়ধ্বনি কর!” — কে, কাদের জয়ধ্বনি করতে বলেছেন?
    উত্তর : মুক্তিকামী কবি নজরুল ইসলাম সমগ্র স্বদেশবাসীকে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।
  • “সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল।”—উদ্ধৃতাংশটিতে ‘সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
    উত্তর : কবি শব্দবন্ধটি দ্বারা দেশবাসীকে সমুদ্রপারের ইংরেজ রাজশক্তির রাজপ্রাসাদের অবরুদ্ধ দরজাকে নির্দেশ করতে চেয়েছেন।
  • “বজ্রশিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর!”—উদ্ধৃতাংশটিতে কবি ‘ভয়ংকর অভিধায় কাকে নির্দেশ করতে চেয়েছেন?
    উত্তর : উদ্ধৃতাংশটিতে কবি অনাগত সুদিন তথা নতুন মহাকালের বেশে পুরাতনকে ধ্বংস করতে যেভাবে আসছে, তাকে ‘ভয়ংকর’অভিধায় অভিহিত করতে চেয়েছেন।
  • “সর্বনাশী জ্বালামুখী ধূমকেতু তার চামর ঢুলায়!”—উদ্ধৃতাংশটিতে ‘ধূমকেতু’ ও ‘চামর’ শব্দ দুটির অর্থ কী?
    উত্তর : উদ্ধৃতাংশটিতে ‘ধূমকেতু’ শব্দটি দিয়ে সৌরজগতের জ্যোতির্ময় পদার্থ বিশেষকে এবং ‘চামর’ শব্দটি দিয়ে চমরী গোরুর পুচ্ছ নির্মিত ব্যজন বা পাখাকে নির্দেশ করা হয়েছে।
  •  “দ্বাদশ রবির বহ্নিজ্বালা ভয়াল তাহার নয়নকটায়,”—উদ্ধৃতাংশটিতে যে দ্বাদশ রবির কথা বলা হয়েছে, তাদের নাম উল্লেখ করো।
    উত্তর : কবি উদ্ধৃতাংশে যে পুরাণ কথিত দ্বাদশ রবির কথা উল্লেখ করেছেন তারা হলেন—বিবস্বান, অৰ্যমা, পুষা, ত্বষ্টা, সবিদা, ভগ, ধাতা, বিধাতা, বরুণ, মিত্র, শত্রু, উরুক্রম নামধারী সূর্য।
  • “দিগম্বরের জটায় হাসে শিশু-চাদের কর” — উদ্ধৃতাংশে কোন্ দেবতার অস্তিত্ব কল্পনা করা হয়েছে?
    উত্তর : উদ্ধৃতাংশে দিগম্বর অর্থাৎ দেবাদিদেব মহাদেবের অস্তিত্ব কল্পনা করা হয়েছে যার শিরচুড়ায় উদীয়মান চাঁদের কল্পনা করা হয়েছে।
  • “ক্ষুরের দাপট তারায় লেগে উল্কা ছুটায় নীল খিলানে!” — উদ্ধৃতাংশে উল্লিখিত ‘উল্কা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
    উত্তর : উদ্ধৃতাংশে কবি ‘উল্কা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন মহাকালের যুদ্ধেদ্ধত স্বরূপের তীব্রতা বোঝানোর জন্য। বিজ্ঞানের ভাষায় উল্কা বলতে বোঝায় আকাশের বুকে ভ্রাম্যমাণ অগ্নিপিণ্ড যার মাঝেমধ্যে ভূপৃষ্ঠে পতন ঘটে।
  •  “ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর ?” —ধ্বংস দেখেও তাকে ভয় না-করার কথা বলা হয়েছে কেন?
    উত্তর : কবি যে ধ্বংসের কথা বলেছেন, সেই মহাকালের ভয়ংকর ধ্বংসলীলার মধ্যেও নবসৃষ্টির বীজ নিহিত থাকে। সেইজন্যই কবি এই ধ্বংস দেখে তাকে ভয় না-করার কথা বলেছেন।
  • “বধূরা প্রদীপ তুলে ধর।”—কীসের জন্য বন্ধুদের প্রদীপ তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর : মহাকাল ভয়ংকর বেশে অ-সুন্দরকে ধ্বংস করে সুন্দরের প্রতিষ্ঠা করতে আসছে। তাই তার আগমনকে বরণ করে নেওয়ার জন্য বন্ধুদের প্রদীপ তুলে ধরার কথা বলা হয়েছে।
  •  “আসবে উষা অরুণ হেসে”—উষা কখন আসবে?
    উত্তর : কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ নামক কবিতায় তারুণ হেসে ঊষা আসবে মহানিশার শেষে তথা মহারাত্রির পর।
  • দিগন্তরের কাঁদন কোথায় লুটায়?
    উত্তর : কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় দিগন্তরের কাঁদন পিঙ্গল ত্রস্ত জটায় লুটায়।
  • রক্তমাখা কৃপাণ কোথায় ঝোলে?
    উত্তর : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রলয়োল্লাস’নামক কবিতায় রক্তমাখা কৃপাণ বিশ্বপাতার বক্ষকোলে দোলে।
  • কালবৈশাখির ঝড় কীরূপে আসে?
    উত্তর : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রলয়োল্লাস’কবিতায় কালবৈশাখির ঝড় মহাকালের চণ্ডরুপে আসে। ধোঁয়ায় ধূপের রূপেও আসে।
  • ‘হাঁকে ওই’- কী বলে হাঁক দেয়?
    উত্তর : “জয় প্রলয়ংকর” বলে হাঁক দেয়।
  • ‘আসছে ভয়ংকর!’ – ভয়ংকর কীভাবে আসছে?
    উত্তর : কবি বলেছেন, বজ্রশিখার মশাল জেলে আসছে ভয়ংকর।
  • ‘এবার মহানিশার শেষে’ উষা কীভাবে আসবে?
    উত্তর : মহানিশা সমাপ্ত হলে ঊষা আসবে অরুণ হেসে।
  • ‘দিগম্বরের জটায়’ কী হাসে?
    উত্তর : দিগম্বরের জটায় হাসে ‘শিশু-চাঁদের কর’ বা সদ্য উদিত চাঁদের কিরণ।
  • ‘রণিয়ে ওঠে’ – কোথায় কী রণিয়ে ওঠে?
    উত্তর : বজ্ররূপ গানে এবং ঝড় তুফানে রণিয়ে ওঠে হ্রেষার কাঁদন।
  • ‘…সে চিরসুন্দর!’- কেন তাকে চিরসুন্দর বলা হয়েছে?
    উত্তর : সে ভাঙে আর গড়ে, তাই সে চিরসুন্দর।
  • ‘…এবার ওই আসে সুন্দর!’ – কোন বেশে সুন্দর আসছেন?
    উত্তর : কাল ভয়ংকরের বেশে সুন্দর আসছেন।
  • ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবি কীসের মধ্যে ‘নূতনের কেতন’ দেখেছেন?
    উত্তর : ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবি কালবৈশাখীর ঝড়ের মধ্যে ‘নূতনের কেতন’ দেখেছেন
  • ‘স্তব্ধ চরাচর’- চরাচর স্তব্ধ কেন?
    উত্তর : প্রলয়নেশার নৃত্য-পাগল ‘ভয়ঙ্কর’-এর ‘অট্টরোলের হট্টগোলে’ চরাচর স্তব্ধ হয়েছিল।
  • ‘আসছে নবীন’ – কী করতে আসছে?
    উত্তর : জীবনহীন অসুন্দরকে চিরতরে ছেদ করতে আসছে নবীন।

রচনাধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান – ৩) প্রলয়োল্লাস (কাজী নজরুল ইসলাম) প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023 প্রলয়োল্লাস

🔴 “আসছে নবীন- জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন?”- উক্তিটির তাৎপর্য লেখাে। ১+২

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

উত্তর : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় প্রলয়ের দেবতা রুদ্রদেবকে আহ্বান জানানো হয়েছে। কবির কল্পনায়, দেশের নবীন প্রজন্মই হল নবযুগের বার্তাবাহী সেই রুদ্রদেব। দেশমাতৃকার মুক্তিসাধনার ব্রতে ব্রতী তরুণ বিপ্লবীরা প্রথমেই জরাজীর্ণ পুরাতন মানসিকতার উপর আঘাত হানবে। যাকিছু জীবনীশক্তিহীন তথা অসুন্দর, সেই সবকিছুর বিনাশ করবে তারা। এইভাবে একটি মৃতপ্রায় সমাজব্যবস্থার ধ্বংসের মধ্য দিয়ে তারা নতুন যুগের সূচনা করবে।
প্রশ্নের মান – ৩

🔴 “আসছে নবীন- জীবনহারা অ-সুন্দরে করতে ছেদন?”- উক্তিটির তাৎপর্য লেখাে। ১+২

উত্তর : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় প্রলয়ের দেবতা রুদ্রদেবকে আহ্বান জানানো হয়েছে। কবির কল্পনায়, দেশের নবীন প্রজন্মই হল নবযুগের বার্তাবাহী সেই রুদ্রদেব। দেশমাতৃকার মুক্তিসাধনার ব্রতে ব্রতী তরুণ বিপ্লবীরা প্রথমেই জরাজীর্ণ পুরাতন মানসিকতার উপর আঘাত হানবে। যাকিছু জীবনীশক্তিহীন তথা অসুন্দর, সেই সবকিছুর বিনাশ করবে তারা। এইভাবে একটি মৃতপ্রায় সমাজব্যবস্থার ধ্বংসের মধ্য দিয়ে তারা নতুন যুগের সূচনা করবে।

🔴 ‘মাভৈঃ মাভৈঃ’ – কবি কেন ভয় পেতে নিষেধ করেছেন?
অথবা,
‘নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়’—উদ্ধৃত অংশটির তাৎপর্য লেখো।
অথবা,
‘ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর?’ কবি ধ্বংস দেখে কেন ভয় পেতে নিষেধ করেছেন?
অথবা,
‘প্রলয়নতুন সৃজন-বেদন’—এ মন্তব্যের কারণ কী? অথবা, ‘প্রাণ-লুকানো ওই বিনাশে’—এ মন্তব্যের কারণ কী?
অথবা,
‘ভাঙা-গড়ার খেলা যে তার কীসের তবে ডর’— ‘ভাঙা-গড়ার খেলাটি কী? তা থেকে বক্তা কেন ভয় পেতে নিষেধ করেছেন?

উত্তর  :বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যের অন্তর্গত প্রলয়োল্লাস কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

মন্তব্যের কারণ :সৃষ্টির উন্মেষ ধ্বংস। ধ্বংসের মধ্যে দিয়েই জীর্ণ-জরা দূরেদূ সরে নবচেতনার জাগরণ ঘটে। প্রকৃতপক্ষে ধ্বংস ‘পাতা ঝরা নয়, পাতা গড়ার মুহূর্ত’। প্রলয়ের প্রচণ্ডতা আসলে নবনির্মাণেরই পূর্বাভাস। প্রলয়রূপী কালবৈশাখীর মহাতাণ্ডবে সিক্ত মৃত্তিকাই নব অঙ্কুরোদ্গমের ভিত্তিভূমি। কবির মতে, প্রলয় হল নতুন সৃষ্টির বেদনা মাত্র। যেহেতু ধ্বংসের মধ্যেই নিহিত থাকে সৃষ্টির বীজ, তাই তিনি ধ্বংসের প্রচণ্ডতা দেখে ভয় পেতে নিষেধ করেছেন।

🔴‘ওই নূতনের কেতন ওড়ে কালবােশেখির ঝড়’-কালবােশেখির ঝড়’ বলতে কী বোেঝানাে হয়েছে? বাক্যটির অন্তর্নিহিত অর্থ লেখাে।

উত্তর :সাম্যবাদী কবি নজরুল ইসলাম ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় আলােচ্য অংশে ‘কালবােশেখির ঝড়’ বলতে বৈশাখের অপরাহ্নে আকাশ বাতাস পান্ডুর করে যে ভয়ংকর ঝড় ওঠে তাকেই বােঝানাে হয়েছে।

গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ থেকে প্রকৃতি ও সমস্ত জীবকূলকে কিছুটা স্বস্তি ও আরাম প্রদানের জন্য ধ্বংসাত্মক শক্তি বহন করে কালবৈশাখী ঝড়ের আগমন ঘটে। গ্রীষ্মের খরতাকে ধ্বংস করে তা শান্তির বার্তা বহন করে আনে। আসলে এই ধ্বংসের মধ্য দিয়ে নবসৃষ্টির বীজ রােপিত হয়। এই ধ্বংস নবচেতনার নবারুণ। প্রকৃতি নূতন রূপে সজ্জিত হয়, আর তাই কবি কালবৈশাখীর ঝড়কে ‘নূতনের কেতন’ বলেছেন।

🔴 “এবার মহানিশার শেষে আসবে ঊষা অরুন হেসে”- মহানিশা কী? এই মন্তব্যের মধ্যদিয়ে কবি কিসের ইঙ্গিত দিয়েছেন?

উত্তর :মহানিশা’ বলতে কবি রাজনৈতিক, সামাজিক ও শােষণ পরাধীনতার জন্য বিশ্বব্যাপী যে অন্ধকার নেমে এসেছে তাকে বুঝিয়েছেন।

রাত্রির অন্ধকার যতই গভীর হােক, সূর্যোদয় অবশ্যম্ভাবী। মানবতাবাদী কবি মহাকাশের সংহারক রূপকে তাই আহ্বান করেছেন। তিনি পারবেন। মহানিশার সংহার করতে। কবি বিশ্বাস করেছেন, এই মহানিশার অবসান ঘটিয়ে নটরাজরূপী মুক্তিপথের অগ্রদূতরা ভারতবর্ষে এনে দেবে স্বাধীনতার সূর্য।

🔴 “প্রলয় বয়েও আসছে হেসে—মধুর হেসে”—কে আসছে? তার হাসির কারণ বিশ্লেষণ করো।

উত্তর :বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের রচিত ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যের অন্তর্গত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় মহাকালের পদধ্বনি হয়েছে। প্রলয়রূপী সেই মহাকালের আসার কথাই প্রদত্ত অংশে বর্ণিত হয়েছে।

হাসির কারণ : প্রলয়ের প্রচণ্ডতা আসলে নবনির্মাণের পূর্বাভাস। প্রকৃতপক্ষে ধ্বংসের মধ্যে লুকানো থাকে সৃষ্টির বীজ। এই কারণেই তাঁর প্রলয়ঙ্কর রূপের মধ্যেও নতুন সৃজনের ইঙ্গিতবাহী মধুর হাসি চিরবিরাজমান।
🔴 ‘বধূরা প্রদীপ তুলে ধর’ – বন্ধুদের কেন প্রদীপ তুলে ধরতে বলা হয়েছে?
অথবা
‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ – কবি কেন জয়ধ্বনি করতে বলেছেন?

উত্তর : বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যের অন্তর্গত প্রলয়োল্লাস কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে। মন্তব্যের কারণ : সৃষ্টির উন্মেষ ধ্বংসে। ধ্বংসের মধ্যে দিয়েই জীর্ণ-জরা দূরেদূ সরে নবচেতনার জাগরণ ঘটে। প্রকৃতপক্ষে ধ্বংস ‘পাতা ঝরা নয়, পাতা গড়ার মুহূর্ত’। প্রলয়রূপী কালবৈশাখীর মহাতাণ্ডবে সিক্ত মৃত্তিকাই নব অঙ্কুরোদগমের ভিত্তিভূমি। কবির মতে, প্রলয় হল নতুন সৃষ্টির বেদনা মাত্র। যেহেতু, পুরাতন সব ধ্বংস হলেই নতুনের সূচনা হবে, তাই কবি প্রলয়কে স্বাগত জানিয়ে উল্লাস করতে বলেছেন/বাংলার বধূদের প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে প্রলয়কে বরণ করে নিতে বলেছেন।

🔴 বজ্ৰশিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর। – বজ্রশিখার মশাল বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ভয়ংকরের এইভাবে আগমনের কারণ কী?

উত্তর :বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়ােল্লাস’ কবিতায় উল্লিখিত ‘বজশিখা’ হল –বজের আগুন। বজ্ৰশিখার মশাল’ বলতে বজ্রের আগুনের মত সর্বনাশী ভয়ংকর মশালের আগুনের কথা বলা হয়েছে। কবি বজ্রের আগুন দিয়ে মশাল জ্বালিয়ে দীনতা, হীনতা ও জীর্ণতার গ্লানিকে পুড়িয়ে নিঃশেষ করে স্বাধীনতা আনতে চেয়েছেন।

শান্ত সমাহিত মরা নদীতে যেমন কচুরিপানা জন্মে ঠিক তেমনি ব্রিটিশ রাজত্বে পরাধীনতার শৃঙ্খলে ভারতবাসীও নির্জীব বস্তুতে পরিণত হয়েছে। তাই দেশবাসীর হৃদয়ের না পাওয়ার শৃঙ্খল মােচনের জন্য, স্বাধীনতার পথ প্রদর্শনের জন্য, প্রথাগত সামাজিকতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য এইরূপ আগমনের কল্পনা করেছেন কবি।
🔴 “ধ্বংস দেখে ভয় কেন তাের”- ধ্বংসকে দেখে ভয় না পাওয়ার কারণ লেখাে।
অথবা,
“ভাঙ্গা গড়া খেলা যে তার কিসের তরে ডর?” ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর : প্রলয় ভয়ঙ্কর, ধ্বংসকারী। সাধারণ মানুষ প্রলয়কে দেখে ভয় পায়। কিন্তু কবি ধ্বংসকে দেখে ভয় না পাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ কবি জানেন। প্রলয়ের অর্থ নতুন সৃজন বেদন। প্রলয় একদিকে যেমন পুরাতন জীর্ণকে ধ্বংস করে। নতুন সৃষ্টি করে। অর্থাৎ নতুন গঠনের পূর্বে হবে ধ্বংস। তাই কবি প্রলয় দেখে ভয় পেতে না করেছেন।
🔴 “আসছে এবার অনাগত প্রলয় নেশার নৃত্যপাগল” – প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল বলতে কী বােঝায়? তার আগমনকে অনাগত বলা হয়েছে কেন?

উত্তর :প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল বলতে প্রলয় সৃষ্টিকারী দেবাদিদেব মহাদেবকে বােঝানাে হয়েছে। তিনি প্রলয় নেশায় মত্ত থাকেন। তাই তাকে প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

➫ তার আগমনের কোনাে নির্দিষ্ট সময় নেই। তিনি ধ্বংসের প্রতীক রূপে আবির্ভূত হয়ে যাবতীয় পুরাতনকে ধ্বংস করে নতুন সৃষ্টি করেন। তাই তার আগমনকে অনাগত বলা হয়েছে।


পাঠ্যগত ব্যাকরন – প্রলয়োল্লাস (কাজী নজরুল ইসলাম)  প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023 বহুবিকল্পীয় প্রশ্ন (প্রশ্নমান – 5) প্রলয়োল্লাস

🛑 ‘আসছে এবার অনাগত প্রলয় নেশায় নৃত্য-পাগল’ — অনাগতের আগমনের বর্ণনা দাও।
অথবা,
আসছে নবীন-জীবনহারা অসুন্দর করতে ছেদন’ — নবীন কীভাবে এসেছিল তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।
অথবা,
‘কাল-ভয়ঙ্করের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর’—কাল ভয়ঙ্করের রূপের বর্ণনা দাও? সে কীভাবে এসেছিল?
অথবা,
মাভৈঃ মাভৈঃ! জগৎ জুড়েজু প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে — প্রলয় কীভাবে ঘনিয়ে এসেছিল তা নিজের ভাষায় লেখো।
অথবা,
‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার মূল ভাববস্তু আলোচনা করো।

উত্তর :বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যের অন্তর্গত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

➫ কবিতায় আমরা দেখতে পাই, ব্রিটিশ শাসনে পরাধীন ভারতমাতার শৃঙ্খল মোচনের প্রয়োজনে প্রলয়ের আগমন সূচিত হয়েছে।

(ক) প্রলয়ের আগমন : কালবৈশাখী ঝড়ের মতো জীর্ণতার বিনাশ করে, তান্ডবনৃত্যরত প্রলয়ের আগমন। তার রণহুংকারে সিন্ধুপারের সিংহ দুয়ার পর্যন্ত ভেঙে চৌচির।

(খ) প্রলয়ের বেশ : মহাকালের চণ্ডরূপেই প্রলয়ের আগমন ঘটেছে। তার হাতে রয়েছে বজ্রশিখার জ্বলন্ত মশাল। প্রলয়দেবের উন্মত্ত কেশের ঝাপটায় আকাশ দুলদু ছে আর তার মুখের অট্টহাসির ‘অট্টরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর’। এই মহাকালের অশ্ব খুরের আঘাতে আকাশ থেকে ছিটকে পড়ছে উল্কাপিণ্ড।

(গ) প্রলয়ের স্বরূপ : এই স্তব্ধতার মাঝেও প্রলয় শুরু করেছে তার ভয়াল ভ্রুকুটি। দ্বাদশ রবির অগ্নিদহন যেন তাঁর তৃতীয় নয়ন থেকে ঝরে পড়ছে। প্রলয়দেবের অগ্নি বর্ণের জটায় দিগন্তের কান্নার অবস্থান। এমনকি তাঁর অশ্রুবিন্দুতেন্দু ও রয়েছে সুপ্ত সমুদ্রের ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস।

মহাকালের রথের সারথি হল এই প্রলয়রূপী কালবৈশাখী। তাঁর হাতে রক্ত বিদ্যু তের চাবুক। আর এই চাবুক হাতেই প্রলয়ের সদৰ্প আগমন।

🛑 “তোরা সব জয়ধ্বনি কর”- কাদের উদ্দেশ্য কবির এই আহ্বান? কবিতার ভাববস্তু বিশ্লেষণ করে এই জয়ধ্বনির যৌক্তিকতা বিচার কর।

উত্তর :
➫ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় পরাধীনতার শৃঙ্খলায় আবদ্ধ ভারতবাসীর উদ্দেশ্য এই আহ্বান করেছেন।
➫ আলোচ্য কবিতায় কবি ব্রিটিশদের অত্যাচারে জর্জরিত ভারতবাসীর দুর্দশা মোচনের জন্য এমন একজনকে আহ্বান জানিয়েছেন, যিনি আগে কখনো আসেন নি। সেই ‘অনাগত’ হলেন ‘প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল’। প্রচণ্ড কালবৈশাখী ঝড়ের মত তিনিও তাণ্ডব করবেন। তার তাণ্ডবের মধ্যেই কবি নতুন যুগের নিশান দেখতে পেয়েছেন। কালবৈশাখী ঝড় যেমন ধ্বংসের মধ্য দিয়ে নতুন সৃষ্টির বীজ বপন করে, প্রলয়ঙ্কর তেমনি নতুন সমাজের ভিত্তি স্থাপন করবে। এইজন্য কবি সকলকে জয়ধ্বনি করতে করতে বলেছেন।

যিনি আসছেন তিনি ভয়ঙ্কর, তিনি প্রলয়ঙ্কর। জগৎ জুড়ে তিনি ধ্বংসলীলা চালাবেন। কিন্তু ওই ধ্বংসের মধ্যেই ‘জরায়-মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ’ লুকিয়ে আছে। পুরাতন সমাজব্যবস্থার ধ্বংস করে নতুন যুগের সূচনা করবেন বলেই কবি সকল দেশবাসীকে তার উদ্দেশ্যে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।

তিনি ভারতবাসীকে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করবেন এবং নতুন আলোর সন্ধান দেবেন। এইজন্য কবি সকলকে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।

ব্রিটিশ রাজশক্তি স্বাধীনতাকামী তরুণ বিপ্লবীদের অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করেছিল। কবি আক্ষেপ করে বলেছেন,

“অন্ধ কারার বন্ধ কূপে
দেবতা বাধা যজ্ঞ-যুপে”।
এইসব দেবতা-সম বিপ্লবীদের উদ্ধার করবেন তিনি। এইজন্য কবি তাকে স্বাগত জানিয়ে সকল দেশবাসীকে তার উদ্দেশ্যে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।

🛑 ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবির আশাবাদ কীভাবে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো।
অথবা
‘ভেঙে আবার গড়তে জানে সে’— কে জানে? ‘ভেঙে আবার গড়তে জানা — বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তর :বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যের অন্তর্গত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

কবিতায় আমরা দেখতে পাই, ব্রিটিশ শাসনে পরাধীন ভারতমাতার শৃঙ্খল মোচনের প্রয়োজনে প্রলয়ের আগমন সূচিত হয়েছে।

(ক) প্রলয়ের আগমন :কালবৈশাখী ঝড়ের মতো জীর্ণতার বিনাশ করে, তান্ডবনৃত্যরত প্রলয়ের আগমন। তার রণহুংকারে সিন্ধুপারের সিংহদুয়ার পর্যন্ত ভেঙে চৌচির।
(খ) প্রলয়ের বেশ :মহাকালের চণ্ডরূপেই প্রলয়ের আগমন ঘটেছে। তার হাতে রয়েছে বজ্রশিখার জ্বলন্ত মশাল। প্রলয়দেবের উন্মত্ত কেশের ঝাপটায় আকাশ দুলদু ছে আর তার মুখের অট্টহাসির ‘অট্টরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর’। এই মহাকালের অশ্ব খুরের আঘাতে আকাশ থেকে ছিটকে পড়ছে উল্কাপিণ্ড।

(গ) প্রলয়ের স্বরূপ :এই স্তব্ধতার মাঝেও প্রলয় শুরু করেছে তার ভয়াল ভ্রুকুটি। দ্বাদশ রবির অগ্নিদহন যেন তাঁর তৃতীয় নয়ন থেকে ঝরে পড়ছে। প্রলয়দেবের অগ্নি বর্ণের জটায় দিগন্তের কান্নার অবস্থান। এমনকি তাঁর অশ্রুবিন্দুতেন্দু ও রয়েছে সুপ্ত সমুদ্রের ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস। মহাকালের রথের সারথি হল এই প্রলয়রূপী কালবৈশাখী। তাঁর হাতে রক্ত বিদ্যু তের চাবুক। আর এই চাবুক হাতেই প্রলয়ের সদৰ্প আগমন।

আশাবাদ :প্রলয় হল—সবুজের অভিযান’। মহাকালরূপী প্রলয়ের এই অনিবার্যআগমন যেন ‘পাতা ঝরার’ পাশাপাশি ‘পাতা ধরার’ খেলা। প্রকৃতপক্ষে প্রলয়ের ভয়ঙ্করতা হল ‘সৃজন বেদন’। প্রলয়ময় এই মহানিশার শেষে যে নতুন ভোরের আলো প্রকাশিত হবে—এ ব্যাপারে কবি আশাবাদী। তিনি জানেন, প্রলয়ের শেষে রয়েছে নব সৃজনের ইঙ্গিত। তাই তো নতুন দিনের আগমনের আশায় কবি প্রলয়কে বরণ করে নিতে বলেছেন।

🛑‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতা অবলম্বনে কবির স্বদেশ ভাবনার পরিচয় দাও।
অথবা,
প্রলয়োল্লাস’ কবিতা অবলম্বনে কবির বিদ্রোহী মানসিকতার পরিচয় দাও।

উত্তর :বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যের অন্তর্গত ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

➫ কবিতায় আমরা দেখতে পাই, ব্রিটিশ শাসনে পরাধীন ভারতমাতার শৃঙ্খল মোচনের প্রয়োজনে প্রলয়ের আগমন সূচিত হয়েছে।

(ক) প্রলয়ের আগমন : কালবৈশাখী ঝড়ের মতো জীর্ণতার বিনাশ করে, তান্ডবনৃত্যরত প্রলয়ের আগমন। তার রণহুংকারে সিন্ধুপারের সিংহদুয়ার পর্যন্ত ভেঙে চৌচির।

(খ) প্রলয়ের বেশ : মহাকালের চণ্ডরূপেই প্রলয়ের আগমন ঘটেছে। তার হাতে রয়েছে বজ্রশিখার জ্বলন্ত মশাল। প্রলয়দেবের উন্মত্ত কেশের ঝাপটায় আকাশ দুলদু ছে আর তার মুখের অট্টহাসির ‘অট্টরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর’। এই মহাকালের অশ্ব খুরের আঘাতে আকাশ থেকে ছিটকে পড়ছে উল্কাপিণ্ড।

(গ) প্রলয়ের স্বরূপ : এই স্তব্ধতার মাঝেও প্রলয় শুরু করেছে তার ভয়াল ভ্রুকুটি। দ্বাদশ রবির অগ্নিদহন যেন তাঁর তৃতীয় নয়ন থেকে ঝরে পড়ছে। প্রলয়দেবের অগ্নি বর্ণের জটায় দিগন্তের কান্নার অবস্থান। এমনকি তাঁর অশ্রুবিন্দুতেন্দু ও রয়েছে সুপ্ত সমুদ্রের ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস।

মহাকালের রথের সারথি হল এই প্রলয়রূপী কালবৈশাখী। তাঁর হাতে রক্ত বিদ্যু তের চাবুক। আর এই চাবুক হাতেই প্রলয়ের সদৰ্প আগমন।

‘প্রলয়’ শব্দের অন্দরে নিহিত আছে ধ্বংসের তান্ডব, আর ‘উল্লাস’ শব্দে আছে আনন্দের উৎসার। ধ্বংসের মধ্যেই লুকিয়ে থাকা সৃষ্টির উপলব্ধি করেছিলেন কবি। তাই ভারতবর্ষের পরাধীনতা দূরদূ করার ক্ষেত্রে তাঁর ভরসা ছিল—প্রলয়রূপী তরুণ বিপ্লবীরা। তিনি জানতেন, সশস্ত্র বিপ্লবের মধ্য দিয়েই ভারতবাসীরা ফিরে পাবে নিজেদের হৃত স্বাধীনতা। প্রকৃতপক্ষে প্রলয়ের ধ্বংসলীলার মাধ্যমে কবি আসন্ন প্রভাতের শতনাম গেয়েছেন। গোটা কবিতা জুড়েজু ই আমরা তাঁর এই বিদ্রোহী মানসিকতার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ লক্ষ্য করি। তাই এককথায় বলতে গেলে—কবির শব্দচয়নে, শব্দের উচ্ছ্বাসে এ কবিতা হল ‘বিদ্রোহের অমৃত বাণী’।
🛑 “ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর? প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন”- কোন ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে? প্রলয়কে কেন ‘নূতন সৃজন-বেদন’ বলা হয়েছে?

উত্তর :কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবি পুরাতন, ক্ষয়িষ্ণু সমাজব্যবস্থা তথা পুরাতন মানসিকতার ধ্বংসের কথা বলেছেন।

আলোচ্য কবিতায় কবি এই সত্যকেই প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন যে, ধ্বংসের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সৃষ্টির বীজ। যেমন, ধ্বংসাত্মক কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক গাছপালা ভেঙে পড়ে, বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু ঝড়ের ফলে একদিকে যেমন গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, তেমনি বায়ুবাহিত বীজের মাধ্যমে অনেক নতুন চারাগাছের জন্ম হয়।

কবি পরাধীন ভারতবাসীকে ব্রিটিশদের অপশাসনের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য ধ্বংসের দেবতাকেই আহ্বান করেছেন। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, ধ্বংসের দেবতা হলেন রুদ্রদেব। তবে, বাস্তবে কবি দেশের তরুণ বিপ্লবীদের আহ্বান জানিয়েছেন। এই তরুণ বিপ্লবীরা দেশকে পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্ত করবে বলে কবি আশা পোষণ করেছেন। তবে, স্বাধীনতা লাভের পথ এতটা মসৃণ নয়। বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষিত দেশের নবীন প্রজন্মকে প্রথমেই হীনবল ভারতবাসীর দীনহীন মানসিকতাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে, তারপরেই তারা ব্রিটিশ রাজশক্তিকে ভারত থেকে উৎখাত করতে পারবে।

কবির মতে, তরুণ বিপ্লবীদের ভূমিকা আপাতদৃষ্টিতে ধ্বংসাত্মক মনে হতে পারে। তাদের কর্মকান্ডে সমাজের স্থিতাবস্থা সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হলেও সেটা নতুন সৃষ্টির প্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কিছু নয়। সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় জননী যেমন প্রসব-বেদনা অনুভব করে, তেমনি বিল্পবীদের ক্রিয়াকলাপের মধ্যেও থাকবে নতুনের ‘সৃজন-বেদনা’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *