অভিষেক

অভিষেক Madhyamik Bengali Suggestion 2023

অভিষেক  Madhyamik Bengali Suggestion 2023
মাধ্যমিক অভিষেক সাজেশন ২০২4

অভিষেক Madhyamik Bengali Suggestion 2024 | মাধ্যমিক অভিষেক সাজেশন ২০২4 যদি যদি কোন কিছু বাদ পড়ে যায় তাহলে কিন্তু তোমরা অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবে। আমরা এই যে সাজেশন তৈরি করে দিলাম এটা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য তো অবশ্যই কিন্তু full সাজেশনটা আপনারা কমপ্লিট করে নেবেন কারণ সমস্ত প্রশ্ন মাথায় রেখে এই সাজেশনটা তোমাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে নিচে পিডিএফও দেওয়া রয়েছে অবশ্যই তোমরা পিডিএফ তাকে করে নেবে এবং তোমাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে অবশ্যই শেয়ার করে দেবে। Madhyamik Bengali অভিষেক Suggestion 2023

যদি কারো কোন কিছু জানার থাকে বা বলার থাকে অবশ্যই নিজের কমেন্ট বক্সটিতে ক্লিক করে কমেন্ট করে দেবেন তাহলে আমাদেরও বুঝতে সুবিধা হবে কার কোথায় অসুবিধা রয়েছে বা সুবিধা হচ্ছে। Madhyamik Bengali জ্ঞানচক্ষু Suggestion 2023

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

আশা করব সম্পূর্ণ সাজেশনটা তোমাদের খুব কাজে আসবে তাই অনেক কষ্ট করে এই সাজেশনটা বানানো হয়েছে।

Madhyamik Bengali অভিষেক Suggestion 2023 দেবে তাদের জন্য কিন্তু এই অংকে সাজেশনটা তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩ এর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যদি আরও কোন সাজেশন লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করুন বা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এবং সার্চ বক্সে আপনি আপনার প্রশ্নটি লিখুন দেখবেন তার উত্তর নিচে আপনারা পেয়ে যাবেন এবং সমস্ত সাবজেক্টের সাজেশন প্রশ্ন উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েব পেজটাকে বুক মার্ক করে রাখুন তাতে তোমাদের সুবিধা হবে।

চাইলে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলেও যুক্ত হতে পারো টেলিকম চ্যানেলের লিংক নিচে দেওয়া রয়েছে ধন্যবাদ। Madhyamik Bengali অভিষেক Suggestion 2023

মাধ্যমিক অভিষেক সাজেশসাজেশন ২০২4

 


অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান – ১) অভিষেক (মাইকেল মধুসূদন দত্ত) প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023

  1. ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম কী?
    উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম ‘অভিষেক’।
  2. “প্রণমিয়া ধাত্রীর চরণে,/কহিলা”—ইন্দ্রজিৎ কী বলেছিল?
    উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার কুশল জিজ্ঞাসা করেছিল এবং সেখানে ধাত্রীর আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেছিল।
  3. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা উত্তরিলা।” “অম্বুরাশি-সুতা’-কে এবং কেন তার এমন নাম?
    উত্তর : ‘অম্বুরাশি’ শব্দের অর্থ জলসমূহ, ‘সুতা’ শব্দের অর্থ কন্যা। সমুদ্রমন্থনের সময় লক্ষ্মীর উত্থান হয়েছিল বলে তাকে ‘অম্বুরাশি-সুতা’ বলা হয়েছে।
  4.  “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি সুতা”—অম্বুরাশি-সুতা কার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন?
    উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। অম্বুরাশি-সুতা বা লক্ষ্মী ইন্দ্রজিতের ধাত্রীমাতা প্রভাষার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।
  5. “সসৈন্যে সাজেন আজি যুঝিতে আপনি।”-কে সসৈন্যে সাজেন?
    উত্তর : উদ্ধৃত পঙকিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত প্রিয় পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুতে লঙ্কেশ্বর রাবণ সৈন্যদলসহ যুদ্ধসাজে সজ্জিত হন।
  6. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া;”—এই বিস্ময়ের কারণ কী ছিল?
    উত্তর : রামচন্দ্রকে খন্ড খন্ড করে কেটে ফেলার পরে কে বীরবাহুকে হত্যা করল তা ভেবেই ইন্দ্রজিৎ বিস্মিত হয়েছেন।
  7. ছদ্মবেশী লক্ষ্মী কোন সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন?
    উত্তর : ছদ্মবেশী লক্ষ্মী রাবণপুত্র বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ এবং তাতে রাবণের শোকাকুলতার সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন।
  8.  “এ অদ্ভুত বারতা”—কোন বারতার কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। এখানে বীরচূড়ামণি বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদের কথাই বলা হয়েছে।
  9.  “শীঘ্ৰ কহ দাসে” শীঘ্র কী বলতে বলা হয়েছে?
    উত্তর : ছদ্মবেশী লক্ষ্মী বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ দিতে এসেছেন মেঘনাদকে লক্ষ্মী কোথায় সেই মৃত্যু সংবাদ পেলেন তা শীঘ্ন বলতে বলা হয়েছে।
  10. “রত্নাকর রত্নোত্তমা ইন্দিরা সুন্দরী উত্তরিলা”—‘ইন্দিরা সুন্দরী কে?
    উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। লক্ষ্মীর অপর নাম ইন্দিরা। তাই এখানে। লক্ষ্মীকেই ইন্দিরা সুন্দরী বলা হয়েছে।11. “যাও তুমি ত্বরা
  11. করি:”—এই শীঘ্র যাওয়ার প্রয়োজন কী?
    উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে রাক্ষসকুলের মান রক্ষা করার জন্যই মেঘনাদের শীঘ্ন যাওয়ার প্রয়োজন বলে লক্ষ্মী মন্তব্য করেছেন।
  12. “…রোষে মহাবলী/মেঘনাদ”—মেঘনাদ রুষ্ট হয়ে কী করেছিলেন?
    উত্তর : মেঘনাদ রুষ্ট হয়ে ফুলরাশি ছিড়ে ফেলেছিল, সোনার বালা দূরে ফেলে দিয়েছিল।
  13. “পদতলে পড়ি, শোভিল কুণ্ডল।” ‘কুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কী?
    উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীতাকুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কর্ণভূষণ অর্থাৎ কানের অলংকার।
  14. “হা ধিক মোরে!”—ইন্দ্রজিৎ কেন নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিলো?
    উত্তর : শত্রুসৈন্য যখন লঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে তখন তিনি প্রসোদকাননে সময় কাটাচ্ছেন—এই ভেবেই ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল।
  15.  “বৈরিদল বেড়ে স্বর্ণলঙ্কা”—কাদের বৈরিদ বলা হয়েছে?
    উত্তর : উদ্ধৃত পর্ভূক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত এখানে রামচন্দ্র ও তার সৈন্যবাহিনীকে বৈরিল বলা হয়েছে।
  16.  “হেথা আমি বামাদল মাঝে?”—কখন ইন্দ্রজিৎ একথা বলেছেন?
    উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ইন্দ্রজিৎ একথা বলেছেন যখন রাঘব সৈন্যরা চারপাশ থেকে লঙ্কাপুরীকে ঘিরে ফেলেছে।
  17. “হেথা আমি বামিদলমাঝে।” – ‘হেথা’ বলতে কোন স্থানের কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর : উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত৷ ‘হেথা’ বলতে এখানে কনকলঙ্কার প্রমোদ উদ্যানকেই বোঝানো হয়েছে।
  18. “এই কি সাজে আমারে”—কী সাজে না বলে বক্তার মনে হয়েছে?
    উত্তর : রামচন্দ্রের সৈন্যবাহিনী কনকলঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে; এই সময় ইন্দ্রজিতের প্রমোদকাননে বিচরণ করা সাজে না।
  19. “হৈমবতীসত যথা…” কীসের কথা এখানে বলা হয়েছে?
    উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে দেবসেনাপতি কার্তিকের তারকা বধের কথা এখানে বলা হয়েছে।
  20.  “কিম্বা যথা বৃহন্নলারুপী কিরীটী”—‘বৃহন্নলারুপী কিরীটী’ কাকে বলা হয়েছে?
    উত্তর : উদ্ভূত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। মহাভারতের অর্জুন চরিত্রটি হলেন বৃহন্নলারূপী কিরীটী।
  21. ‘ছদ্দবেশী অম্বুরাশি-সুতা’- ‘অম্বুরাশি-সুতা’ কার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল?
    উত্তর : ‘অম্বুরাশি-সুতা’ অর্থাৎ দেবী লক্ষী মেঘনাদের ধাত্রী প্রভাষা রাক্ষসীর ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল।
  22. কহ দাসে লঙ্কার কুশল।’- উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বক্তাকে লঙ্কার কোন খবর দিয়েছিলেন?
    উত্তর : উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ ছদ্দবেশী লক্ষীদেবী বক্তা মেঘনাদকে লঙ্কার যে খবর দিয়েছিলেন তা হল, ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে।
  23. ‘এ অদ্ভুত বারতা, জননী/কোথায় পাইলে তুমি,’ – কোন্ অদ্ভুত বার্তার কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর : অদ্ভুত বার্তাটি হল, ঘোরতর যুদ্ধে মেঘনাদের প্রিয় ভাই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে।
  24.  ‘হা ধিক্ মােরে’ – বক্তা নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছে কেন?
    উত্তর : বক্তা অর্থাৎ মেঘনাদ নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছে কারণ শত্রুর দল তার জন্মভূমি অর্থাৎ লঙ্কা ঘিরে ফেলেছে, অথচ সে তখন ‘বামাদল মাঝে’ আমোদ-প্রমোদে ব্যস্ত।
  25.  ‘এই কি সাজে আমারে’ – তাকে কী সাজে না?
    উত্তর : উদ্ধৃতাংশের বক্তা মেঘনাদের মতে, স্বদেশ যখন বিপন্ন তখন নারীসান্নিধ্যে অবসর যাপন করা তাকে সাজে না।
  26.  ‘মায়াবী মানব/সীতাপতি’ – সীতাপতিকে ‘মায়াবী মানব’ কেন বলা হয়েছে?
    উত্তর : সীতাপতি রামচন্দ্র মরে গিয়েও পুনরায় বেঁচে উঠেছিল বলে তাকে ‘মায়াবী মানব’ বলা হয়েছে।
  27. ‘ধরি পতি-কর-যুগ’ – পতির কর-যুগল ধরে কী বলেছিল?
    উত্তর : পতির কর-যুগল ধরে প্রমীলা বলেছিল যে, তাকে রেখে তার প্রাণসখা কোথায় চলে যাচ্ছেন।
  28.  ‘বিদায় এবে দেহ, বিধুমুখী।’ – কেন এই অনুনয়?
    উত্তর : মেঘনাদ রাঘবকে বধ করার জন্য লঙ্কায় ফিরে যাচ্ছিল। সেইজন্য তার প্রিয়তমা স্ত্রী প্রমীলার কাছে অনুনয়সহ বিদায় চেয়েছিল।
  29. ‘কাঁপিলা লঙ্কা, কাঁপিলা জলধি।’ – কী কারণে লঙ্কাপুরী ও জলধি কেঁপেছিল?
    উত্তর : মেঘনাদ রাগে তার ধনুকের শিঞ্জিনী টেনে যে ‘টংকার’ (টং ধ্বনি) ছেড়েছিল, তার ফলেই লঙ্কা এবং সমুদ্র কেঁপে উঠেছিল।
  30. ‘এ মায়া, পিতঃ, বুঝিতে না পারি!’ – কোন্ মায়ার কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর : রামচন্দ্র মরে গিয়েও আবার বেঁচে উঠেছিল। আলোচ্য অংশে এই মায়ার কথা বলা হয়েছে।
  31. ‘হায়, বিধি বাম মম প্রতি।’ – কেন এই উক্তি?
    উত্তর : মহাপরাক্রমী রাবণকে সামান্য বনচারী রামের কাছে কার্যত হার স্বীকার করতে হয়েছে। এইজন্য বক্তা অর্থাৎ রাবণের মনে হয়েছে যে বিধাতা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
  32. ‘এ কলঙ্ক, পিতঃ, ঘুষিবে জগতে।’ – কোন্ কলঙ্কের কথা বলা হয়েছে?
    উত্তর : পুত্র মেঘনাদের বর্তমানে পিতা রাবণ যুদ্ধ করতে গেছেন- এটা মেঘনাদের কাছে কলঙ্কের মতো।
  33. ‘তায় আমি জাগানু অকালে’- এর ফল কী হয়েছিল?
    উত্তর : যাকে অকালে জাগানো হয়েছিল সেই কুম্ভকর্ণ বলী রাঘবের হাতে পরাস্ত ও নিহত হয়েছে এবং তার দেহ সমুদ্রতীরে ভূপতিত রয়েছে।
  34.  ‘আগে পূজ ইষ্টদেবে’ – কেন ইষ্টদেবকে আগে পূজা করতে বলা হয়েছে?
    উত্তর : যুদ্ধযাত্রার আগে ইষ্টদেবের আশীর্বাদ নিতে হয়। সেইজন্য ইষ্টদেবকে আগে পূজা করতে বলা হয়েছে।
  35.  ‘অভিষেক করিলা কুমারে।’ – কুমারকে কী দিয়ে অভিষিক্ত করা হয়েছিল?
    উত্তর : বিধি অনুসারে গঙ্গাজল দিয়ে কুমারকে অর্থাৎ মেঘনাদকে অভিষিক্ত করা হয়েছিল।

রচনাধর্মী প্রশ্ন (প্রশ্নমান – ৫) অভিষেক (মাইকেল মধুসূদন দত্ত) প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023

1. ‘ছিঁড়িলা কুসুমদাম রোষে মহাবলী’ — ‘মহাবলী’ কে? তার এমন আচরণের কারণ কী? ১+২
অথবা,
‘এই সাজে কি আমারে’মোরে’ — এমন মন্তব্যের কারণ কী?
অথবা,
‘ধিক মোরে – বক্তা কেন আত্মধিক্কার জানিয়েছেন?

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

প্রশ্নোক্ত অংশে মহাবলী বলতে ইন্দ্রজিতকে বোঝানো হয়েছে। ধাত্রীমাতার ছদ্মবেশিনী দেবী লক্ষ্মীর কাছ থেকে ইন্দ্রজিৎ জানতে পারেন যে,

(ক) বীরবাহু যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
(খ) রামচন্দ্র পুনর্জীবন লাভ করেছেন।
(গ) লঙ্কেশ্বর রাবণ পুত্র হত্যার প্রতিশোধ নিতে যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

লঙ্কার এমন সংকটময় মুহূর্তে ইন্দ্রজিৎ প্রমোদকাননে আনন্দ-বিলাসে মত্ত ছিলেন। তাই এই দুঃ সংবাদগুলি শোনার পর অনুশোচনা দগ্ধ ইন্দ্রজিৎ নিজের কুসুমদাম সহ যাবতীয় বিলাসসজ্জা দূরেদূ নিক্ষেপ করে বীরের সাজে সজ্জিত হন।
2. ‘কহিলা কাঁদিয়া ধনি’—‘ধনি’ কে? তিনি কেঁদে কোন্কথা বলেছিলেন? ১+২
অথবা,
প্রমিলা ও ইন্দ্রজিতের কথোপকথন নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

‘ধনি’ কথার আক্ষরিক অর্থ – রমণী। কিন্তু প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ‘ধনি’ বলতে ইন্দ্রজিতের পত্নী প্রমিলাকে বোঝানো হয়েছে। বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ ও লঙ্কার সংকটময় অবস্থার কথা শুনে ইন্দ্রজিৎ কালবিলম্ব না করে যুদ্ধ যাত্রার প্রস্তুতি নেন। আকস্মিকভাবে তিনি প্রমোদকানন ও স্ত্রী প্রমিলাকে ত্যাগ করে রথে চড়ে বসলে, প্রমিলা অশ্রুসজল নয়নে স্বামীর দুইদু হাত জড়িয়ে ধরে তাকে বলতে থাকেন —

(ক) গভীর অরণ্যে লতা যখন হাতির পা জড়িয়ে ধরে, তখন হাতি চলে গেলেও সেই লতাকে নিজের পদতলেই ঠাঁই দেয়।
(খ) স্বামীর বিরহে তার জীবন রক্ষা সম্ভব নয়।

3. ‘এতেক কহিয়া রাজা’ – রাজা কী বললেন? তারপর তিনি কী করেছিলেন? ১+২
অথবা,
‘প্রভাতে যুঝিও বৎস রাঘবের সাথে’—বক্তা কে? এমন মন্তব্যের কারণ কী?
অথবা,
‘আগে পুজো ইষ্টদেবে’ — কার উদ্দেশ্যে কেন এই মন্তব্য?
অথবা,
‘কহিলা রাক্ষসাধিপতি’ — রাক্ষসাধিপতি কে? তিনি কী বলেছিলেন?

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে। প্রিয়ভাই বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ শুনে ইন্দ্রজিৎ লঙ্কায় উপস্থিত হন এবং পিতা রাবণের কাছে যুদ্ধ যাত্রার অনুমতি প্রার্থনা করেন। প্রথমদিকে লঙ্কেশ্বর অনুমতি দিতে না চাইলেও, পরবর্তীকালে আত্মপ্রত্যয়ী ও যুদ্ধাভিলাসী পুত্রের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন –

(১) সূর্যযেহেতু অস্তাচলগামী তাই যুদ্ধবিরতির সময় না গিয়ে প্রভাতে যুদ্ধ যাত্রার আয়োজন করা হোক।
(২) যুদ্ধযাত্রার পূর্বেইন্দ্রজিৎ যেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে গিয়ে ইষ্টদেবতার উদ্দেশ্যে পূজা এবং যজ্ঞ সেরে নেন।

➫ এই পর্যন্ত বলার পর, রাবণ রাজা যথাবিধি নিয়মে গঙ্গাজল দিয়ে ইন্দ্রজিৎকে সেনাপতি পদে অভিষিক্ত করেন।
4. “হাসিবে মেঘবাহন”- ‘মেঘবাহন’ কে? তিনি হাসবেন কেন? ১+২

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে ‘মেঘবাহন’ বলতে দেবরাজ ইন্দ্রকে বোঝানো হয়েছে।

দেবরাজ ইন্দ্র হলেন স্বর্গরাজ্যের অধীশ্বর। ইন্দ্রকে জয় করেই মেঘনাদ ইন্দ্রজিৎ উপাধি পেয়েছিল। সুতরাং মেঘনাদ যে একজন মহাপরাক্রমশালী যোদ্ধা এবিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ ছিল না। মেঘনাদের মতে, সে যদি নিজে যুদ্ধে না গিয়ে বৃদ্ধ পিতা রাবণকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠায়, তাহলে দেবরাজ ইন্দ্র হাসাহাসি করবেন।

5. ‘সাজিছে রাবণরাজা’ — রাবণরাজা কেন সাজছেন? তাঁর সাজসজ্জার বিবরণ দাও। ১+২

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

প্রিয়পুত্র বীরবাহুর মৃত্যু র প্রতিশোধ নিতে শোকাতুর রাবণ রণসজ্জায় সজ্জিত হয়েছেন।

রাবণের রণপ্রস্তুতি আভাস স্বরূপ রাজবাড়ির সিংহদ্বারে বেজে চলেছে রণদামামা। চতুরঙ্গ সেনা নিয়ে রাবণ রাজা যুদ্ধ সজ্জায় সজ্জিত হচ্ছেন।

(ক) যথাহাতির দল গর্জন করছে।
(খ) অশ্ব হ্রেষাধ্বনি করছে।
(গ) রথী এবং পদাতিক বাহিনী রণমদের মদকতায় মত্ত হয়ে হুংকার দিচ্ছে। এছাড়াও রথীবাহিনীর রথ থেকে আকাশে উড়ছে রেশমি পতাকা আর সৈন্যদলের সোনালি বর্ম থেকে আকাশে স্বর্ণালি আভা বিচ্ছুরিত হচ্ছে।

6. ‘কহিলা কাঁদিয়া ধনি’—‘ধনি’ কে? তিনি কেঁদে কোন কথা বলেছিলেন? ১+২
অথবা,
প্রমিলা ও ইন্দ্রজিতের কথোপকথন নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

‘ধনি’ কথার আক্ষরিক অর্থ—রমণী। কিন্তু প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে ‘ধনি’ বলতে ইন্দ্রজিতের পত্নী প্রমিলাকে বোঝানো হয়েছে। বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ ও লঙ্কার সংকটময় অবস্থার কথা শুনে ইন্দ্রজিৎ কালবিলম্ব না করে যুদ্ধ যাত্রার প্রস্তুতি নেন। আকস্মিকভাবে তিনি প্রমোদকানন ও স্ত্রী প্রমিলাকে ত্যাগ করে রথে চড়ে বসলে, প্রমিলা অশ্রুসজল নয়নে স্বামীর দুই হাত জড়িয়ে ধরে তাকে বলতে থাকেন —

(ক) গভীর অরণ্যে লতা যখন হাতির পা জড়িয়ে ধরে, তখন হাতি চলে গেলেও সেই লতাকে নিজের পদতলেই ঠাঁই দেয়।
(খ) স্বামীর বিরহে তার জীবন রক্ষা সম্ভব নয়।

7. ‘শিরঃ চুম্বি অম্বুরাশি-সুতা উত্তরিলা’—‘অম্বুরাশি সুতা’ কে? তিনি কী উত্তর দিয়েছিলেন?
অথবা,
“কি হেতু, মাতঃ গতি তবুআজি এ ভবনে’—বক্তা কে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি কী শুনেছিলেন?
অথবা,
‘কহ দাসে লঙ্কার কুশল’–কে, কার কাছে লঙ্কার কুশল বার্তা শুনতে চেয়েছিলেন? তিনি কী শুনেছিলেন?
অথবা,
কি আর কহিব, কনক-লঙ্কার দশা’ — কনক লঙ্কার কোন্দশা বক্তা বর্ণনা করেছিলেন?

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে।

➫ অম্বুরাশি-সুতা হলেন সমুদ্রের কন্যা স্বরূপা স্বয়ং দেবী লক্ষ্মী।

➫ দেবী লক্ষ্মী ইন্দ্রজিতের ধাত্রীমাতার ছদ্মবেশে প্রমোদকাননে উপস্থিত হলে, ইন্দ্ৰজিৎ মায়ের আকস্মিক আগমনের হেতু ও লঙ্কার কুশল বার্তা জানতে চান। উত্তরে ছদ্মবেশী দেবী লক্ষ্মী জানান —

(ক) বীরবাহু যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
(খ) পুত্র হারিয়ে লঙ্কেশ্বর রাবণ শোক সাগরে নিমজ্জিত হয়েছেন।
(গ) রাবণ পুত্র হত্যার প্রতিশোধ নিতে যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

8. ‘সাজিলা রথীন্দ্রষভ’—‘রথীন্দ্রষভ’ কে? তার সাজ-সজ্জার বর্ণনা দাও। ইন্দ্রজিতের যুদ্ধ সাজ-এর বর্ণনা দাও। ১+২
অথবা
“ঘুচাব এ অপবাদ বধি রিপুকূলে’—বক্তা কোন্অপবাদের কথা বলেছেন? উক্ত অপবাদ ঘোচানোর জন্য তিনি কীভাবে প্রস্তুত হলেন?

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে। প্রশ্নোক্ত অংশে রাবণের বীর পুত্র ইন্দ্রজিৎকে ‘রথীন্দ্রষভ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। ছদ্মবেশী ধাত্রীমাতার মুখে বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ শোনার পর, স্বদেশভূমি রক্ষার্থে ইন্দ্ৰজিৎ বিলাস-সজ্জা ত্যাগ করে বীর-সজ্জায় সজ্জিত হন। ইন্দ্রজিতের এই রণসজ্জাকে কবি দুটিদু পৌরাণিক রণসজ্জার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যথা —

(ক) তারকাসুর বধের সময় কার্তিক যেমন বীর-আভরণে সজ্জিত হয়েছিলেন।
(খ) অর্জুন বিরাটপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে গোধন উদ্ধারের সময় যেমন সজ্জায় সজ্জিত হয়েছিলেন।

এমনই যোদ্ধাসুলভ পোশাক পরিধান করে ইন্দ্রজিৎ রথযাত্রায় উদ্যত হন। সেই রথও ছিল তার বীরত্বের বিজ্ঞাপন। রথের চাকা থেকে ঝরছিল বিদ্যুৎ প্রভা আর রথের চূড়া থেকে সদর্পে উড়ছিল রামধনুরঙের পতাকা।

9. ‘বিধি ৰাম মম প্রতি–বক্তা কে? তিনি কেন এমন কথা বলেছেন? ১+২
অথবা
‘এ কাল সমরে নাহি চাহে প্রাণ মম পাঠাইতে তোমা বারংবার’ — কোন প্রসঙ্গে কেন এই মন্তব্য?

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি গৃহীত হয়েছে। এ প্রশ্নোক্ত উক্তিটির বক্তা লঙ্কেশ্বর রাবণ। তিনি পুত্র ইন্দ্রজিতের উদ্দেশ্যে এ কথাটি বলেছিলেন।

প্রিয়ভাই বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ শুনে ইন্দ্রজিৎ লঙ্কায় উপস্থিত হন এবং পিতা রাবণের কাছে যুদ্ধ-যাত্রার অনুমতি প্রার্থনা করেন। সদ্য পুত্র হারিয়ে রাবণ কিছুতেই আর এক পুত্রকে যুদ্ধে পাঠাতে চাইছিলেন না। রাবণ ইন্দ্ৰজিৎকে জানান — ভাগ্য তার প্রতি অপ্রসন্ন। তাইতো —

(১) শিলাখণ্ড জলে ভাসছে।
(২) পুনর্জীবন লাভ করছে।
(৩) স্বর্ণলঙ্কাকে বীরশূন্য করে বীরবাহু কিংবা কুম্ভকর্ণের মতো মহাযোদ্ধারা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারাচ্ছেন।

10. “নাদিলা কর্বুরদল হেরি বীরবরে/মহাগর্ভে।” ‘কবূরদল’ শব্দের অর্থ কী? তাদের এমন আচরণের কারণ কী?

উত্তর :কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখিত অভিষেক কবিতায় কর্বুরদল শব্দের অর্থ ‘রাক্ষসদল’।

রাঘবসৈন্য লঙ্কা আক্রমণের ফলে লঙ্কা ক্রমশ বীরশূন্য হয়ে পড়ে। এই ভয়াবহ যুদ্ধে রাবণপুত্র বীরবাহু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এই অবস্থায় ধাত্রীমাতার কাছে খবর পেয়ে লঙ্কাপুরীতে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিৎ উপস্থিত হলে তাঁকে দেখে রাক্ষসবীরগণ আনন্দে গর্জন করে। এই গর্জনের মধ্যে দিয়েই ইন্দ্রজিতের প্রতি তাদের আস্থা যেমন প্রকাশ পেয়েছে, তেমনি নিজেদের হতাশা কাটিয়ে ওঠার আনন্দও প্রকাশিত হয়েছে।


পাঠ্যগত ব্যাকরন – অভিষেক (মাইকেল মধুসূদন দত্ত)  প্রশ্ন উত্তর – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৩ – Madhyamik Bengali Suggestion 2023 বহুবিকল্পীয় প্রশ্ন (প্রশ্নমান – 5)

1. “নমি পুত্র পিতার চরণে, করজোড়ে কহিলা;” – পিতা ও পুত্রের পরিচয় দাও। পাঠ্যাংশ অবলম্বনে পিতা ও পুত্রের কথােপকথন নিজের ভাষায় লেখাে। ১+8

উত্তর :
➫ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে পিতা ও পুত্র হলেন যথাক্রমে রাক্ষসরাজ রাবণ এবং মেঘনাদ।
➫ আলোচ্য অংশে পিতাপুত্রের মধ্যে যে কথপোকথন হয়েছিল তা এইরকম – মেঘনাদ বলল যে, সে শুনেছে রাম নাকি মরে গিয়ে আবার বেঁচে উঠেছে। সে এই মায়া বুঝতে পারেনি কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া হলে সে আবার সকলকে সমূলে নির্মূল করার কথা বলে।
রাবণ জানায় যে এই প্রাণঘাতী যুদ্ধে বারবার তার প্রিয় পুত্র মেঘনাদকে পাঠাতে ইচ্ছে করে না। বিধাতা তার প্রতি বিমুখ হয়েছেন বলেই রাম মরেও বেঁচে উঠেছে।

মেঘনাদ রাক্ষসরাজকে বলে যে রামের মতো সামান্য একজন মানুষকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। মেঘনাদ আরো বলে যে, তার বর্তমানে যদি লঙ্কেশ্বর রাবণকে যুদ্ধে যেতে হয় তবে দেবরাজ ইন্দ্র হাসবেন এবং আরাধ্য দেব অগ্নি ক্রোধিত হবেন।

রাক্ষসরাজ এবার মেঘনাদকে মহাবলী কুম্ভকর্ণের করুণ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যে মেঘনাদ যদি একান্তই যুদ্ধ করতে যেতে চায় তবে সে যেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে গিয়ে ইষ্টদেবের পুজো করে। তিনি আরো বলেন যে, মেঘনাদকে তিনি সেনাপতি পদে বরণ করবেন এবং সূর্য যেহেতু অস্তাচলগামী, তাই সে যেন সকালে যুদ্ধ করতে যায়।

2. ‘অভিষেক’ কবিতা অনুসারে মেঘনাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। ৫
উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ অনুসারে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিতের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল এইরকম –

1. দেশপ্রেমিক : মেঘনাদ একজন যথার্থ দেশপ্রেমিক। ছদ্মবেশী লক্ষীদেবীকে দেখা মাত্রই সে জিজ্ঞাসা করেছিল- “কহ দাসে লঙ্কার কুশল”। তার অনুপস্থিতিতে শত্রুর দল স্বর্ণলঙ্কা ঘিরে ফেলেছে- এই খবর শোনা মাত্রই সে লঙ্কায় ফিরে যেতে চেয়েছিল। ব্যক্তিগত সুখের চেয়ে তার কাছে প্রিয় ছিল তার দেশ। তাই লঙ্কার বিপদের সময় সে ‘বামাদল মাঝে’ থাকার জন্য নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছিল।

2. পিতৃভক্তি : লঙ্কায় ফিরে মেঘনাদ যখন দেখল যে তার পিতা অর্থাৎ রাক্ষসরাজ রাবণ যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন মেঘনাদ নিজেই রামের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার অনুমতি চেয়েছিল। তাছাড়া, তার মতো একজন সক্ষম পুত্রের বর্তমানে যদি রাক্ষসরাজ রাবণ যুদ্ধক্ষেত্রে যান সেটা মেঘনাদের পক্ষে লজ্জাজনক। তার এইরকম মনোভাব থেকে তার আত্মসম্মান বোধেরও পরিচয় পাওয়া যায়।

3. সাহসী : রাম এবং তার বানরসেনা কুম্ভকর্ণ এবং বীরবাহুর মতো বীর যোদ্ধাদের নিধন করেছিল। তা সত্বেও মেঘনাদ স্বেচ্ছায় যুদ্ধ করতে যেতে চেয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই যুদ্ধে জয়লাভের ব্যাপারেও সে নিশ্চিত ছিল।

4. দায়িত্বশীল : প্রমীলার কাছে বিদায় নেওয়ার সময় সে তার লঙ্কাযাত্রার কারণ বলেছিল- “সমরে নাশি, তোমার কল্যাণে/ রাঘবে”। অর্থাৎ, তার স্ত্রীর (এবং সমস্ত রাক্ষসকূলের) মঙ্গলার্থে রামকে বধ করার জন্যই সে প্রমীলাকে রেখে লঙ্কায় যেতে উদ্যত হয়েছিল।

এছাড়াও মেঘনাদের চরিত্রের আরেকটি দিক হল গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধা। ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষীদেবীকে যেমন সে প্রণাম করেছিল তেমনি লঙ্কায় ফিরেই পিতা রাক্ষসরাজ রাবণকে প্রণাম নিবেদন করেছিল।

3. ‘অভিষেক’ কবিতার স্বল্প পরিসরে রাক্ষসরাজ রাবণের চরিত্রের যে দিকগুলি উদ্ভাসিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখ।

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের প্রধান চরিত্র যদিও মেঘনাদ, তবে রাবণ চরিত্রটিও স্বমহিমায় উজ্জ্বল। আলোচ্য পাঠ্যাংশের ক্ষুদ্র পরিসরে রাক্ষসরাজ রাবণের চরিত্রের দিকগুলি ফুটে উঠেছে সেগুলি হল –

1. বীরত্ব :লঙ্কাধিপতি রাবণ নিঃসন্দেহে একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। তার যোগ্যতম পুত্র মেঘনাদের অনুপুস্থিতিতে তিনি নিজেই যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ইতিপূর্বে রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে তার প্রিয় পুত্র বীরবাহু এবং প্রিয় ভাই মহাবলী কুম্ভকর্ণ প্রাণ হারিয়েছিল। আপনজনদের হারিয়ে রাবণ ভেঙে পড়েছিলেন ঠিকই কিন্তু শত্রুনিধনের উদ্দেশ্যে যথার্থ বীরের মতো রণসজ্জায় সজ্জিত হয়েছিলেন।

2. পুত্রস্নেহ :লঙ্কায় ফিরে আসার পর মেঘনাদ রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যেতে চেয়েছিল। মেঘনাদের বীরত্বের প্রতি রাবণের কোনো সন্দেহ ছিল না কিন্তু সেই ‘কাল সমরে’ বার বার নিজের প্রিয় পুত্রকে তার মন সায় দেয়নি।

3. সামরিক জ্ঞান :মেঘনাদ যখন একান্তই রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চেয়েছিল, রাবণ তাকে বলেছিলেন পরের দিন সকালে যেতে। কারণ, সেদিন সূর্য ছিল অস্তাচলগামী।

4. ঈশ্বরে ভক্তি :রাবণ মেঘনাদকে যুদ্ধযাত্রার আগে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবের পূজা করতে বলেছিলেন। এর থেকে তার ঈশ্বরভক্তির পরিচয় পাওয়া যায়।

পরিশেষে বলা যায়, বাল্মীকি রামায়ণে রাক্ষসরাজ রাবণ একজন খলচরিত্র হলেও আলোচ্য কাব্যাংশে রাবণের মানবিক দিকটির পরিচয় পাওয়া যায়।

4. ‘হেনকালে প্রমীলা সুন্দরি’- ‘হেনকালে’ বলতে কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? সেই সময় কী ঘটেছিল তা সংক্ষেপে লেখো। ১+৪

উত্তর :মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে ‘হেনকালে’ বলতে মেঘনাদ যখন লঙ্কায় ফিরে যাওয়ার জন্য রথে চেপেছিল, সেই সময়ের কথা বলা হয়েছে।

স্বামীর দুটি হাত ধরে প্রমীলা সুন্দরী জানতে চেয়েছিল যে তাকে রেখে মেঘনাদ কোথায় যাচ্ছে। সে বলে যে, মেঘনাদকে ছাড়া সে বাঁচতে পারবে না। নিজেকে ব্রততীর সঙ্গে তুলনা করে প্রমীলা একটি উপমার সাহায্যে নিজের দুঃখের কথা তুলে ধরেছিল। প্রমীলা বলেছিল যে, গভীর অরণ্যপথে বনলতা যদি হাতির পায়ে জড়িয়ে যায় এবং সেই হাতি বনলতার রসিকতায় মন না দিয়ে নিজের পথে এগিয়ে চলে, তবুও লতাকে সে পায়ে জড়িয়ে রাখে। নিজেকে মেঘনাদের দাসী বলে পরিচয় দিয়ে প্রমীলা জিজ্ঞাসা করেছিল সে কেন তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

এর উত্তরে মেঘনাদ জানিয়েছিল যে, প্রমীলা তাকে যে দৃঢ় বন্ধনে বেঁধেছে সেই বন্ধন কেউ খুলতে পারবে না। শীঘ্রই ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেঘনাদ প্রমীলাকে বলেছিল যে তার (প্রমীলার) কল্যাণার্থে রামকে বধ করতেই সে যাচ্ছে। এই বলে মেঘনাদ তার প্রিয় পত্নীর কাছে বিদায় চেয়েছিল।

5. অভিষেক’ কবিতা অবলম্বনে ইন্দ্রজিৎ চরিত্রটি বর্ণনা করো।
অথবা,
ইন্দ্রজিতের বীরত্ব ও দেশপ্রেমের পরিচয় দাও। ৫

উত্তর :মধুকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর অন্তর্গত ‘অভিষেক’ কবিতায় কবি ইন্দ্ৰজিৎ চরিত্রটিকে অপূর্বমমত্বের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন।

চরিত্র বিশ্লেষণ : যে সমস্ত চারিত্রিক গুণাবলির জন্য ইন্দ্রজিং চরিত্রটি অনন্য হয়ে উঠেছে, সেগুলি হল —

(১) গুরুজনের প্রতি ভক্তি : পিতা-মাতার প্রতি ইন্দ্রজিৎ-এর ভক্তি ও শ্রদ্ধাবোধ ছিল প্রবল। তাই —

(i) প্রমোদকাননে ধাত্রীমাতাকে দেখা মাত্রই ইন্দ্ৰজিৎ স্বর্ণসিংহাসন ছেড়ে মা-কে ভক্তিপূর্ণ প্রণাম জানিয়েছেন।
(ii) রণসজ্জায় সজ্জিত পিতাকে প্রণাম জানিয়ে তাঁর কাছ থেকে যুদ্ধযাত্রার অনুমতি প্রার্থনা করেছেন।

(২) অপরাধবোধ : ভাই বীরবাহু শত্রুদের দ্বারা নিহত এবং স্বর্ণলঙ্কা শত্রুদের দ্বারা বেষ্টিত অথচ ইন্দ্ৰজিৎ প্রমোদকাননে নারী-সঙ্গে মত্ত; এ কথা জেনে ইন্দ্ৰজিৎ আত্মধিক্কার দিয়ে বলে ওঠেন—হা ধিক্ মোরে’।

(৩) বীরত্ব : ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ ও পিতার যুদ্ধযাত্রার কথা শুনে ইন্দ্রজিতের বীরসত্তা জাগরিত হয়। তিনি নিজের বংশকে শত্রুমুক্ত করতে এবং রাজধর্মপালনের জন্য কাল বিলম্ব না করে যুদ্ধযাত্রার সিদ্ধান্ত নেন।

(৪) ভ্রাতৃপ্রেম : ধাত্রীমাতার মুখে বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ শুনে ইন্দ্ৰজিৎ যেভাবে নিজের ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, তাতে ভাইয়ের প্রতি তাঁর অকুণ্ঠ ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।

(৫) পত্নীপ্রেম : প্রমোদকানন থেকে বিদায় বেলায় স্ত্রী প্রমিলার হাত ধরে ইন্দ্রজিৎ জানিয়েছিলেন যে তাদের দুজনের ভালোবাসার বন্ধন চিরঅক্ষয়। এই প্রেমের বন্ধন ছিন্ন করার ক্ষমতা কারোর নেই।

(৬) আত্মবিশ্বাসী : ইন্দ্রজিৎ পূর্বেদুইদু বার রামচন্দ্রকে পরাস্ত করে হত্যা করলেও, প্রতিবারই রামচন্দ্র মায়ার বলে পুনর্জীবন লাভ করেছিলেন। তবুও ইন্দ্রজিৎ তৃতীয়বারের জন্য রামচন্দ্রকে পরাস্ত করার ব্যাপারে প্রবল আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।

(৭) দেশপ্রেম : স্বদেশ ও স্বজাতিকে রক্ষার জন্য ইন্দ্রজিৎ আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে যুদ্ধযাত্রার উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন—যা তাঁর দেশপ্রেমের জ্বলন্ত উদাহরণ। বাল্মিকীর রামায়ণে ইন্দ্রজিৎ অধর্মচারী নীচ রাক্ষস হলেও, মধুসূদনের ‘মানস পুত্র’ ইন্দ্রজিৎ হলেন—কর্তব্যবোধ, স্বদেশপ্রেম এবং ভালোবাসার দুর্লভ সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা এক আদর্শ মহানায়ক তথা বীর দেশপ্রেমিক।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *